রোকনুজ্জামান খান (১৯২৫–২০০০)। খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক, আলোকিত মানুষ, সাংবাদিক ও সংগঠক। ছেলেবুড়ো সবার কাছে যিনি দাদা ভাই নামেই পরিচিত। দৈনিক ইত্তেফাকের শিশু–কিশোরদের উপযোগী কচিকাঁচার আসর বিভাগের পরিচালক হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন। দাদা ভাই রোকনুজ্জামান খান ১৯২৫ সালের ০৯ এপ্রিল রাজবাড়ি জেলার পাংশায় মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মৌলভী মোখাইর উদ্দীন খান। মায়ের নাম রাহেলা খাতুন। তার পৈত্রিক বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার ভবানীপুর গ্রামে। রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই ১৯৪৭ সালে কর্মজীবন শুরু করেন কলকাতার দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকার মাধ্যমে। ১৯৪৮ সালে আবুল মনসুর আহমদ সম্পাদিত ইত্তেহাদ পত্রিকার ‘মিতালী মজলিস’ নামক শিশু বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে শিশু সওগাত পত্রিকায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালে দৈনিক মিল্লাতের কিশোর দুনিয়া’র শিশু বিভাগের পরিচালক ছিলেন। ১৯৫৫ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় যোগ দিয়ে তরুণ সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং তিনি মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত এই পত্রিকায় কাজ করেন। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় শিশু–কিশোরদের উপযোগী কচিকাঁচার আসর বিভাগের পরিচালক নিযুক্ত হন এবং আসর পরিচালকের নামকরণ করা হয় দাদাভাই। সেই থেকে তিনি নতুন পরিচয় পান দাদাভাই। রোকনুজ্জামান নিজে অনেক কবিতা ও ছড়া লিখেছেন এবং শিশুদের লেখা সংশোধন ও সম্পাদনা করে পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। শিশুদের চিত্তবৃত্তির উন্মেষ ও প্রতিভার বিকাশে তিনি নিরলস প্রয়াস চালিয়েছেন। তাঁর প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থ হচ্ছে হাট্টিমাটিম (১৯৬২), খোকন খোকন ডাক পাড়ি, আজব হলেও গুজব নয় প্রভৃতি। তাঁর সম্পাদিত ঝিকিমিকি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিশুসংকলন। এসব রচনার মাধ্যমে তিনি কোমলমতি শিশুদের মনে নীতিজ্ঞান, দেশপ্রেম ও চারিত্রিক গুণাবলি জাগ্রত করার চেষ্টা করেন। তিনি কচি ও কাঁচা (১৯৬৫) নামে একটি মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। রোকনুজ্জামানের অপর একটি বড় অবদান ‘কচি–কাঁচার মেলা’ (১৯৫৬) নামে একটি শিশুসংগঠন প্রতিষ্ঠা। তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এর শাখা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বাঙালি সংস্কৃতি লালন করতেন বলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনারা কচি–কাঁচার মেলার অফিস ভাংচুর করে এবং বইপত্র পুড়িয়ে দেয়। রোকনুজ্জামান খান সৃজনশীল ও সাংগঠনিক কর্মের পুরস্কারস্বরূপ বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৮), শিশু একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৪), একুশে পদক (১৯৯৮), জসিমউদ্দীন স্বর্ণপদক এবং রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ও রোটারি ফাউন্ডেশন ট্রাস্টির পল হ্যারিস ফেলো সম্মানে ভূষিত হন। ৩ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শিশু সংগঠনে অসামান্য অবদান রাখায় রোকনুজ্জামান খান ২০০০ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন।
Subscribe and be a part of Read Chain and Get Exclusive Reward, Special Discount & More
Simple Black T-Shirt
5.0
62 Reviews242 orders
Seamlessly predominate enterprise metrics without performance based process improvements.