নাজমা চৌধুরী (২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২ - ৮ আগস্ট ২০২১) ছিলেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ও জেন্ডার অধ্যয়ন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বিভাগটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালে তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক রোকেয়া চেয়ার মনোনীত হন। ২০০৮ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
জন্ম ও বংশ : ১৯৪২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সিলেটে জন্ম নেয়া নাজমা চৌধুরী ছিলেন তার বাবা প্রকৌশলী ইমামুজ্জামান চৌধুরী ও মা আমিরুন্নেসা খাতুনের তৃতীয় সন্তান।তাঁর পৈতৃক বাড়ী নবিগঞ্জের পিটুয়া-সদরাবাদ গ্রামের চৌধুরী বাড়ী। তাঁদের পূর্বপুরুষ শাহ সদরউদ্দীন কোরেশী ছিলেন শাহজালালের সফরসঙ্গী।
শিক্ষা : তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিলো ভারতের আসামে। পরে পিতার কর্মস্থল পরিবর্তনের কারণে ঢাকা ও রাজশাহীতে স্থানান্তর হয় তাদের পরিবার। নাজমা চৌধুরী স্কুল জীবন কেটেছে ঢাকা ও রাজশাহীতে। পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে মেয়েদের মধ্যে অষ্টম স্থান পেয়েছিলেন তিনি। পরে হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন এবং মেধা তালিকায় তার অবস্থান ছিলো নবম। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন : ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন নাজমা চৌধুরী। ১৯৬৬ সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনে যান পিএইচডি করতে এবং পিএইচডি শেষে ১৯৭২ সালে দেশে ফিরে আসেন। ১৯৮৪ সাল থেকে পরবর্তী তিন বছর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং বিভাগে নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন বিষয়ক নানা কোর্স অন্তর্ভুক্ত করেন।
১৯৮৮ সালে ভিজিটিং স্কলার হিসেবে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান তিনি।
পরে ২০০০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর তিনি বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। অবসরের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর আগে ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে যোগ দেন। এছাড়া তিনি বেলগ্রেডে ইউনেস্কো সাধারণ সম্মেলন এবং নাইরোবি ও বেইজিংয়ে বিশ্ব নারী সম্মেলনেও অংশ নেন।
রাজনৈতিক জীবন : নাজমা চৌধুরী ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ : ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাজমা চৌধুরী ও বারবারা নেলসন সম্পাদিত উইমেন অ্যান্ড পলিটিক্স ওয়ার্ল্ডওয়াইড প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯৪ সালে। বইটি ভিক্টোরিয়া চাক পুরস্কার অর্জন করে।
ব্যক্তিগত জীবন : নাজমা চৌধুরী ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন এবং তার স্বামী মনাকষা জমিদার বাড়ীর মাইনুর রেজা চৌধুরী তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ছাত্র ছিলেন। মাইনুর রেজা চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি। তারা ১৯৬১ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং এই দম্পতির দুটি সন্তান হয়। মাইনুর রেজা চৌধুরী ২০০৪ সালে মারা যান। সাবেক অর্থমন্ত্রী মুর্তজা রেজা চৌধুরী ছিলেন নাজমা চৌধুরীর শশুর এবং পাকিস্তানের সাবেক অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী তাঁর খালু শশুর
মৃত্যু : নাজমা চৌধুরী ২০২১ সালের ৮ আগস্ট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন
Subscribe and be a part of Read Chain and Get Exclusive Reward, Special Discount & More
Simple Black T-Shirt
5.0
62 Reviews242 orders
Seamlessly predominate enterprise metrics without performance based process improvements.