ষোলতে না হয়ে ছাব্বিশে হোক

ষোলো বছরের চেয়ে ছাব্বিশের সম্পর্কের স্থায়িত্ব অনেক বেশি
120 Ratings
৳138 ৳230 Save 40 %
  • Dhaka city Cash on Deliver
  • 7 Days Happy Returns
  • Dhaka City COD (1kg-7kg) + ৳65
  • Outside Dhaka city COD (1kg-4kg) + ৳109
  • Sundarban Courier (1kg-4kg) + ৳69
সম্পর্কের সাত-সতেরো

জীবন হচ্ছে জাগ্রত মুহূর্তগুলোতে অনুভূত-উপলব্ধ-অনুভব-উপলব্ধির সমষ্টি। বিজ্ঞানের ভাষায় একজন মানুষের মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা কমপক্ষে ২.৫ পেটাবাইট। আমরা চাইলেও এটিকে প্রসারিত করতে পারব না। তাই পুরনো বিষয় ভুলে যাওয়াটাই শ্রেয়। এখনকার সময়ে মানুষ সবচেয়ে কম বুঝে বেশি যে কথাটি বলে তা হলো―‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’ মানুষ যত সহজে ভালোবাসি ভালোবাসি বলে গলা ফাটায়―তত সহজে দেড় টাকা দামের একটা প্যারাসিটামলও খায় না। সেটা খাওয়ার আগে অন্তত দুইবার ঔষধের গায়ে ডেটলাইনটা দেখে নেয়; কিন্তু ভালোবাসি বলার আগে দ্বিতীয়বার ভাববে না। একজনের কাউকে চুমু খেতে ইচ্ছে করছে, স্পর্শ করতে ইচ্ছে হচ্ছে―মানুষ হুট করেই বলে ফেলে ‘ভালোবাসি।’ একটা ছেলের কাউকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হচ্ছে, লংড্রাইভে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে―সে হুট করে বলে বসবে ‘ভালোবাসি।’ অন্যদিকে, একটা মেয়ের ইচ্ছেমতো শপিং করতে ইচ্ছে হচ্ছে, ফুচকা কিংবা রেস্তোরাঁর বিল অন্যকারো ঘাড়ে চাপাতে ইচ্ছে হচ্ছে―সেও হুট করে বলে বসবে ‘ভালোবাসি।’
এভাবে ফুচকার টেবিল আর লংড্রাইভের গাড়ির পিছনের সিট থেকে সম্পর্কটা একসময় জায়গা বদল করে নির্জন কোনো এক প্রকোষ্ঠে। আবেগের ঘোরে হোক কিংবা কামুকতায় মত্ত―নির্জনতার কিছু সময় অবসান ঘটিয়ে একসময় প্রেমিক পুরুষটি বলে―‘দ্যাখো, তাড়াহুড়োয় সন্তানসম্ভবা হয়ে গেছো, কিছু মনে করো না প্লিজ! চলো, এইবার আমরা ভালোবেসে বিয়ে করি, অতঃপর দু’জনে সুখি হই।’ বিষয়টা কেমন যেন চুরি করা গরু দিয়ে কোরবান করার তাগিদে শরীয়ত খোঁজার মতো। যার শুরুটাই হয়েছে অপবিত্রতা দিয়ে তার সমাপ্তিতে পবিত্রতা আশা করা কোন যুক্তির সামিল? যৌনতার সুখ পেতে ভালোবাসা লাগে না, পতিতাই যথেষ্ট। ভালোবাসার সুখ পেতে যৌনতা লাগে না, পারস্পরিক বোঝাবুঝি হলেই হয়। 
নারী জাতি প্রশংসার কাঙাল। হাতের রান্নার একটু প্রশংসা করে দেখুন, আপনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা রান্নাঘরে পুড়তে একপায়ে খাড়া। পৃথিবীতে যৌনতার প্রয়োজন না থাকলে খুব কম নারীই পুরুষের মুখ থেকে ওরকম আকুণ্ঠ প্রশংসা শুনতো। সম্পর্ক করা তো অনেক দূরের কথা, নিজের স্বামী অন্যকোনো মেয়ের দিকে তাকালেই রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়া মহিলাটিও স্বামীর অগোচরে পর পুরুষের শরীরের গন্ধ শুঁকতে দিশেহারা। নিজের বউ প্রেম করা তো দূরের কথা, পর পুরুষের সাথে কথা বললে মাথা গরম করা পুরুষকে অন্যের বউয়ের সাথে চুটিয়ে প্রেম করতে দেখেছি। এতসব অসভ্যের মুখোশ পরে সেই আমরাই আবার দিনশেষে নিজেদের সভ্য বলে দাবি করি। আর সমাজের বাকি আট-দশ জনের চোখে নিজেদের রিফ্রেজেন্ট করি ‘উই আর হ্যাপি কাপল।’ 
‘অর্থই অনর্থের মূল’ কথাটা বলতে গেলেও পকেটে যথেষ্ট অর্থ থাকা চাই। স্বামীর অবৈধ আয়ের কথা শুনে যে মহিলা তেলেবেগুনে জ¦লে ওঠে, মাস শেষে একটা মোটা অংক হাতে না পেলে সেই মহিলাও স্বামীকে উপেক্ষা করে―আর, তুলনা করে বসে লাখ টাকা মাসিক আয়ের পাশের বাসার ‘অমুক’ সাহেবের সাথে। মাসে বিশ হাজার টাকা আয় করা ছেলেটা প্রেমিক হিসেবে পারফেক্ট হলেও, স্বামী হিসেবে না। বিশ হাজার টাকা দিয়ে রেস্টুরেন্ট আর নিউমার্কেট ঘোরার মতো তথাকথিত গার্লফ্রেন্ডের অভাব না হলেও এই একবিংশ শতাব্দীতে একই টাকা দিয়ে সংসার করা স্ত্রীর বড্ড অভাব। পৃথিবীতে সম্পর্ক হয় ছয়-এর সাথে নয়-এর, মিথ্যার সাথে ধ্রুব সত্যের। সম্পর্ক হয় কপটচারীর সাথে সংবেদনশীল মনের, ভণিতার সাথে স্পষ্টবাদী ব্যক্তিত্বের। আরও হয় সরলতার সাথে আধুনিকতার। এখানে সম্পর্ক হয় নর্তকীর সাথে বিছানার। খুব কমই হয় দু’টি সংবেদনশীল মনের, সত্যের সাথে সত্যের, মানুষের সাথে মানুষের। ষোলো বছরের চেয়ে ছাব্বিশের সম্পর্কের স্থায়িত্ব অনেক বেশি। ষোলোটা যেখানে আবেগের, মোহের, লেনদেনের; ছাব্বিশটা সেখানে বাস্তবতার, দায়িত্বের আর গাঢ়ত্বের। অতঃপর, ষোলোতে না হয়ে ছাব্বিশেই হোক। 

মাঈন উদ্দিন আবির 

Title ষোলতে না হয়ে ছাব্বিশে হোক
Author
Cover Type
Paper Type
Publisher
Edition 1st Published, 2024
Number of Pages 80
Country বাংলাদেশ
Language Bangla
ISBN 9789849880769
মাঈন উদ্দিন আবির

মাঈন উদ্দিন আবির

মাঈন উদ্দিন আবির জন্ম: অক্টোবর ২৫, ১৯৯৯ সাল, ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায়। পিতা জয়নাল আবেদিন, মাতা সামছুন নাহার। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। শৈশব থেকেই যিনি দূর কল্পনায় চষে বেড়িয়েছেন শব্দ ও বর্ণমালার মিশেলে তৈরি লাঙ্গল নিয়ে। একাডেমিক পড়াশোনা ইংরেজি সাহিত্যে। লেখালেখি করেন বাংলায়। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি লেখালেখির সাথে জড়িত। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি একজন ভ্রমণ পিপাসুও। তাই ব্যাগ সদা তৈরী। সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন অজানা-অচেনা গন্তব্যে; আর অবলোকন করেন চারিধার। অবসরের সময়গুলোতে হাতে তুলে নেন কলম; সখ্য গড়েন শব্দের সাথে বর্ণের। সাহিত্যের দর্পণে তুলে ধরেন মানব জীবন। সাদার উপর কালোর আস্তরণ টেনেছেন প্রেম, যুদ্ধ, ভালোবাসা, নৈরাজ্য আর যতসব অব্যক্ত, অপ্রকাশিত অভিযোগ নিয়ে। ‘Art for Man’s মতাদর্শের পাশাপাশি তিনি বিশ্বাস করেন মানবধর্মে। মফস্বলের প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি। আমিরাবাদ এম.এম. আলিম মাদ্রাসা থেকে একাধারে দাখিল (এসএসসি) ও আলিম (এইচএসসি) শেষ করেন। একই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন তিনি। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে ‘ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে’ স্নাতক শেষ করেন। পাশাপাশি ইসলামী আরাবি বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে কামিলে (মাস্টার্স) অধ্যয়নরত।

Subscribe and be a part of Read Chain and Get Exclusive Reward, Special Discount & More